শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ পূর্বাহ্ন
হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ : মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দর থেকে টেকনাফে আমদানি-রপ্তানি ১২ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তবে মংডুশহর থেকে সচল রয়েছে।
শনিবার টেকনাফ থেকে একটি পণ্যবাহী ট্রলার মংডুতে। সেখান থেকে আরও তিনটি ট্রলার পন্য নিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে এসেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও শুল্ক বিভাগ। আকিয়াব বন্দরে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার কারণে গত ২৪জুন থেকে শনিবার বিকেল পযন্ত আকিয়ার বন্দর থেকে কোনো বাণিজ্যিক পণ্যবাহী ট্রলার টেকনাফে আসেনি।
সেদেশের ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, সেদেশের ব্যবসায়ীরা নিশ্চিত করেছেন শনিবার বিকেল পযন্ত কোনো পণ্যবাহী ট্রলার ছাড়েনি আকিয়াব বন্দর থেকে।সেখানে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় ১৪দিনের লকডাউন দিয়েছে সেদেশের কর্তৃপক্ষ।তবে কতদিন এই নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকবে সেটির তারা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি।
ব্যবসায়ী নুরুল কায়েস বলেন,গত ২৪জুনের পরে আকিয়াব বন্দর থেকে টেকনাফে কোনো পণ্যবাহী ট্রলার আসেনি।মূলত আকিয়াব বন্দর দিয়ে কাঠ, চাল, হিমায়িত মাছ, শুঁটকি, পেঁয়াজ, আদা, হলুদ, আচার, তেঁতুল, চকলেট, মসলাসহ পন্যসামগ্রী টেকনাফে আসে।তবে শনিবার তিনটি পন্যবাহী ট্রলার মংডুশহর থেকে টেকনাফে এসেছে।শুনা যাচ্ছে,আগামী দুই-একদিনের মধ্যে মংডুশহর থেকে পণ্যবাহী ট্রলার আসাও বন্ধ হয়ে যাবে।
সরেজমিনে স্থলবন্দরের দেখা যায়, মিয়ানমারে বড় বড় কোনো পণ্যবাহী ট্রলার চোখে পড়েনি জেটির আশেপাশে।বন্দরের জেটি ছিল প্রায় নৌ যান শূন্য।তবে ছোট ছোট পণ্যবাহী তিনটি ট্রলার থেকে কিছু শ্রমিকেরা মালামাল খালাস করছিলেন।এরমধ্যে শনিবার বিকেলে মংডুশহর থেকে আরও তিনটি ছোট ট্রলারে কয়েকজন ব্যবসায়ীর শুঁটকি, আদা, সুপারি ও আইনছি নামক একধরনের ফল এসেছে।
এসময় কথা হয় শ্রমিক নুর হাসান, আলী আকবর ও হাদিউর রহমানের সঙ্গে। তারা বলেন,আকিয়াব বন্দরে কয়েকজন ট্রলারের মাঝিমাল্লার করোনা শনাক্ত ধরা পড়েছে।এরপর থেকে গত ২৪জুন থেকে সেদেশের আকিয়াব বন্দর থেকে আর কোনো পণ্যেবাহী ট্রলার টেকনাফে আসেনি।তবে মংডুশহর থেকে বিকেল পযন্ত আরও তিনটি ট্রলার আসছে।শুনা যাচ্ছে, দুই-একদিনের মধ্যে মংডু থেকেও কোনো ট্রলার আসবে না।তবে শনিবার সকালে টেকনাফ থেকে কিছু পণ্যবাহী মালামাল নিয়ে একটি ট্রলার মংডুশহরে গেছে।
স্থলবন্দর সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দুই দেশের মধ্যে এ সীমান্ত বাণিজ্য চালু করা হয়। মিয়ানমার থেকে কাঠ, চাল, হিমায়িত মাছ, শুঁটকি, পেঁয়াজ, আদা, হলুদ, আচার, তেঁতুল, চকলেট, মসলা, বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানি হয়।আর বাংলাদেশ থেকে প্লাস্টিক পণ্য, পোশাক, সিমেন্ট এবং ওষুধও রফতানি হয়।মিয়ানমারের মংডু ও আকিয়াব থেকেই মূলত পণ্য আসা-যাওয়া করে আসছে।
মাছ ব্যবসায়ী এম কায়সার বলেন,মিয়ানমারের আকিয়াবে করোনার রোগী সনাক্ত হওয়ার পর লকডাউন চলছে।তাই কবে নাগাদ পরিস্থিতি শীতিল সেই ব্যাপারে এখন পযন্ত দেশের ব্যবসায়ীরা কিছু বলতে পারছে না।
স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইডেট ল্যান্ড পোর্ট টেকনাফের মহাব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ কিছু দিন ধরে আকিয়াব বন্দর থেকে কোনো ধরনের পণ্যবাহী ট্রলার টেকনাফে আসেনি।তবে মংডু থেকে দৈনিক ১-৩টি করে পণ্যবাহী ট্রলার এসেছি।ব্যবসায়ীর কাছ শুনা যাচ্ছে, দুই-একদিনের মধ্যে মংডুতে ও আর কোনো পণ্যবাহী ট্রলার আসবে না।তবে বন্দরের প্রচুর পরিমানের কাঠ ও অন্যান্য মালামালা রয়েছে।সেগুলো খালাস কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা মো.আবসার উদ্দিন বলেন, আকিয়াব নাকি মংডু থেকে পন্য আসা বন্ধ রয়েছে সেটির ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নয়।তবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শুনা যাচ্ছে, মিয়ানমারের আকিয়াব থেকে পণ্য না আসা কয়েকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।পণ্য আসা বন্ধ থাকলে দৈনিক লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply